Hi

ঢাকা ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রংপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ব্রেঞ্চ বিক্রয় করল প্রধান শিক্ষক

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:১০:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩
  • ১৬৬ Time View

এএস নুসরাত জাহান খুশি, রংপুর ব্যুরো।

রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়নের নয়াপুকুর কলেজ বাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ১নং পালিচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক এর পদ ফাঁকা থাকায় গেল মাসের ২৭ তারিখ যোগদান করেন নোরল হক আর যোগদানের পরেই গত ২০ শে মার্চ স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকুল এর কাছে প্রায় ৩১৫ কেজি পুরাতন ব্রেঞ্চের লোহা বিক্রয়ের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০ শে মার্চ দুপুরে স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকুল মিয়াকে ডেকে স্কুলে পুরাতন ব্রেঞ্চের ৬০ টাকা কেজি দরে প্রায় ৩১৫ কেজি লোহা বিক্রয় করেন।
যা নিয়ে অভিভাবক ও এলাকার মাঝে আলোচনায় এসেছে, ১নং পালিচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নোরল হক।
১নং পালিচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে কথা হলে তারা বলেন আমরা স্কুল থেকে ১৮ ই মার্চ পিকনিক গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের কিছু টাকা বকেয়া থেকে যায়। সেই বকেয়া টাকা পরিষোদের জন্য প্রধান শিক্ষক আমাদের না জানিয়ে পুরাতন ব্রাঞ্চের লোহা বিক্রয় করেছে আমরা এর তদন্ত করে অন্যায়ের বিচার চাচ্ছি যাতে করে তিনি কেন আর কেউ দুর্নীতি করতে সাহস না পায় বলে দাবি করেন তারা।
এই বিষয়ে ১নং পালিচড়া সরকাররি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নোরল হক বলেন, আমি আমাদের স্কুলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মিটিং এর মাধ্যমে রেজুলেশন করে আমি টিও স্যারকে আবেদন করে ওনার অনুমতি সাপেক্ষে আমি পুরাতন ব্রাঞ্চের লোহা গুলো বিক্রয় করেছি। তিনি আরো বলেন আমি এই টাকা দিয়ে দুইটি চেয়ার ও দুইটি ফ্যান কিনব সেই কারণে বিক্রয় করেছি।
এই বিষয় নিয়ে ১নং পালিচড়া সরকাররি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সেলিম আক্তার রাঙ্গার সাথে মুটোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, “আমি এর কোন তথ্য পাইনি। তবে এখন জানতে হবে বাস্তব কি। কারণ না জেনে কাউকে দোষারপ করা যাবে না। আগামীকাল স্কুলে যাব গিয়ে শুনে আমি জানাব। এই বিষয়ে কোন রেজুলেশন হয়েছে কিনা জানি না। তবে মৌখিক আলোচনা হয়েছিল “।

তবে তিনি দাবি করেন যে, এই বিষয়ে যারা অভিযোগ করেছে বা জানিয়েছে আমাদের বিপক্ষ লোকজন।
রংপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনোয়ারের সাথে মুটো কথা হলে তিনি বলে, “আমার এই বিষয়ে কোন কিছু জানা নাই। তারা স্কুলে রেজুলেশন করেছে কিনা দেখতে হবে। তিনি আরো বলেন, আবেদন করছে নিলামের জন্য। সেই আবেদন কপি আমরা নেই নাই। আর কি রকম লোহা আমরা তো জানি না। আমি খোজ নিয়ে দেখি কি অবস্থা”।

রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ এম শাহাজান সিদ্দিকের সাথে মুটোফোন কথা হলে তিনি বলেন, “আমি রংপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি।

ব্যবসায়ী জাকুল মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, “আমি গরীব মানুষ । আমি ব্যবসা করে খাই। আমি লেখাপড়া জানি না তবে হিসাব করতে পাই। আমাকে স্কুল থেকে ডেকে বলেছে তারা লোহা বিক্রয় করবে। আমি ৫৭ টাকা কেজি দরে কিনতে চাইলেও তারা ৬০ টাকা কেজি দাবি করে এবং আমাকে প্রায় ৩১৫ কেজি লোহা মেপে দেয়। তিনি আরো বলেন আমি সরকারি অনুমতি আছে কিনা জানতে চাই প্রধান শিক্ষক একটা কাগজ দেখিয়ে বলে এই দেখেন অনুমতি আছে। আমি তার পর কিনেছি। অনুমতি আছে কিনা আর ঐ কাগজ ঠিক কিনা জানিনা”।

তবে এই নিয়ে এলাকাবাসী ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা দাবী করছেন সুষ্ঠু তদন্ত করে এই প্রধান শিক্ষকের উপর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার,
জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্টরা।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

তামাক মুক্ত দিবস উপলক্ষে অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে যাত্রিদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন -আব্দুল কুদ্দুস

রংপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ব্রেঞ্চ বিক্রয় করল প্রধান শিক্ষক

Update Time : ০২:১০:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩

এএস নুসরাত জাহান খুশি, রংপুর ব্যুরো।

রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়নের নয়াপুকুর কলেজ বাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ১নং পালিচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক এর পদ ফাঁকা থাকায় গেল মাসের ২৭ তারিখ যোগদান করেন নোরল হক আর যোগদানের পরেই গত ২০ শে মার্চ স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকুল এর কাছে প্রায় ৩১৫ কেজি পুরাতন ব্রেঞ্চের লোহা বিক্রয়ের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০ শে মার্চ দুপুরে স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকুল মিয়াকে ডেকে স্কুলে পুরাতন ব্রেঞ্চের ৬০ টাকা কেজি দরে প্রায় ৩১৫ কেজি লোহা বিক্রয় করেন।
যা নিয়ে অভিভাবক ও এলাকার মাঝে আলোচনায় এসেছে, ১নং পালিচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নোরল হক।
১নং পালিচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে কথা হলে তারা বলেন আমরা স্কুল থেকে ১৮ ই মার্চ পিকনিক গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের কিছু টাকা বকেয়া থেকে যায়। সেই বকেয়া টাকা পরিষোদের জন্য প্রধান শিক্ষক আমাদের না জানিয়ে পুরাতন ব্রাঞ্চের লোহা বিক্রয় করেছে আমরা এর তদন্ত করে অন্যায়ের বিচার চাচ্ছি যাতে করে তিনি কেন আর কেউ দুর্নীতি করতে সাহস না পায় বলে দাবি করেন তারা।
এই বিষয়ে ১নং পালিচড়া সরকাররি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নোরল হক বলেন, আমি আমাদের স্কুলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মিটিং এর মাধ্যমে রেজুলেশন করে আমি টিও স্যারকে আবেদন করে ওনার অনুমতি সাপেক্ষে আমি পুরাতন ব্রাঞ্চের লোহা গুলো বিক্রয় করেছি। তিনি আরো বলেন আমি এই টাকা দিয়ে দুইটি চেয়ার ও দুইটি ফ্যান কিনব সেই কারণে বিক্রয় করেছি।
এই বিষয় নিয়ে ১নং পালিচড়া সরকাররি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সেলিম আক্তার রাঙ্গার সাথে মুটোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, “আমি এর কোন তথ্য পাইনি। তবে এখন জানতে হবে বাস্তব কি। কারণ না জেনে কাউকে দোষারপ করা যাবে না। আগামীকাল স্কুলে যাব গিয়ে শুনে আমি জানাব। এই বিষয়ে কোন রেজুলেশন হয়েছে কিনা জানি না। তবে মৌখিক আলোচনা হয়েছিল “।

তবে তিনি দাবি করেন যে, এই বিষয়ে যারা অভিযোগ করেছে বা জানিয়েছে আমাদের বিপক্ষ লোকজন।
রংপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনোয়ারের সাথে মুটো কথা হলে তিনি বলে, “আমার এই বিষয়ে কোন কিছু জানা নাই। তারা স্কুলে রেজুলেশন করেছে কিনা দেখতে হবে। তিনি আরো বলেন, আবেদন করছে নিলামের জন্য। সেই আবেদন কপি আমরা নেই নাই। আর কি রকম লোহা আমরা তো জানি না। আমি খোজ নিয়ে দেখি কি অবস্থা”।

রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ এম শাহাজান সিদ্দিকের সাথে মুটোফোন কথা হলে তিনি বলেন, “আমি রংপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি।

ব্যবসায়ী জাকুল মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, “আমি গরীব মানুষ । আমি ব্যবসা করে খাই। আমি লেখাপড়া জানি না তবে হিসাব করতে পাই। আমাকে স্কুল থেকে ডেকে বলেছে তারা লোহা বিক্রয় করবে। আমি ৫৭ টাকা কেজি দরে কিনতে চাইলেও তারা ৬০ টাকা কেজি দাবি করে এবং আমাকে প্রায় ৩১৫ কেজি লোহা মেপে দেয়। তিনি আরো বলেন আমি সরকারি অনুমতি আছে কিনা জানতে চাই প্রধান শিক্ষক একটা কাগজ দেখিয়ে বলে এই দেখেন অনুমতি আছে। আমি তার পর কিনেছি। অনুমতি আছে কিনা আর ঐ কাগজ ঠিক কিনা জানিনা”।

তবে এই নিয়ে এলাকাবাসী ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা দাবী করছেন সুষ্ঠু তদন্ত করে এই প্রধান শিক্ষকের উপর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার,
জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্টরা।