যে ১০টি অভ্যাস তোমার ব্রেইনের ১২টা বাজাচ্ছে
-
Reporter Name - Update Time : ১১:০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- ৫৭ Time View

ডা.মো.রেজাউল করিম অপু (এমবিবিএস)
তোমার মাথা ধরছে, কাজ করতে গেলে মন বসে না, তাড়াতাড়ি কিছুই মাথায় ঢোকে না, শেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছো এই সব হঠাৎ হয় নাই ভাই।
ব্রেইন খ্যাপা হওয়ার পেছনে তুমি নিজেই দায়ী। মানুষের প্রতিদিনকার ছোট ছোট অভ্যাসই তার ব্রেইনকে সবচেয়ে বেশি নষ্ট করে।
অবচেতনভাবে এমন কিছু ছোট ছোট অভ্যাস তোমার ব্রেইনের প্রফেশনাল পারফর্মারকে বানিয়ে ফেলতে পারে একজন ডিজিটাল জোম্বি!
এইবার সেইসব অভ্যাস এক এক করে ধরিয়ে দিচ্ছি, যাতে তুমি বুঝে ফেলো, কী কী করে তুমি নিজেই নিজের ব্রেইন পঁচিয়ে ফেলছো!
১. ঘুম কমায়ে মনে করতেসো তুমি এলোন মাস্ক
রাত ৩টা পর্যন্ত মেসে আড্ডা → সকাল ৮টার কুইজে ঝাপসা ব্রেইন নিয়ে ঝাঁপ দাও!
পুরো সেমিস্টার ঘুম কমিয়ে ভার্সিটির ক্যান্টিনের রেকর্ড করা চা মস্তিষ্কে ঢালা মানেই, তোমার Brainless Burnout প্রস্তুত!
ঘুমকে ইগনোর করো না। ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন বলে প্রতিদিন ৭–৯ ঘণ্টা না ঘুমালে ব্রেইনের নিউরাল কানেকশনগুলো দুর্বল হয়ে যায়। মানে, তুমি দিনে যত শিখছো রাতে কম ঘুমের কারণে অর্ধেকই মুছে যাচ্ছে। এভাবে ব্রেইন র্যাম হয়ে যায় পুরাই লো-স্পেস।
২. Social Media নোটিফিকেশন কে জীবন যৌবন এর একমাত্র অবলম্বন মনে করছো
যেই মাত্র টুং বাজে, সেখানেই ব্রেইন দৌড় মারে। কোড লিখতেছো, HCF-π² বের করতেছো – কোনো লাভ নাই! ফোনের সুন্দরী নোটিফিকেশন বললেই ব্রেইনের সমস্ত neuron অকেজো হয়ে যায়।
৩. দিনে ১০টা ট্যাব, ২০টা কাজ শুরু করো; কিন্তু শেষ করো ১টাও না!
তুমি ব্রেইনকে বলো “এই জাভাস্ক্রিপ্ট শিখি, সাথে ইউআই বানাই, সাথে ইন্সটাগ্রামের স্ট্র্যাটেজি দেখি”
তুমি মানুষ না, মাল্টিপ্লেয়ারে বাজানো ব্রেইন-পিয়ানো! এগুলা ঠিক করো ভাই।
তোমার ব্রেইন বারবার কনটেক্সট সুইচ করতে গিয়ে ধীরে ধীরে ফ্রিজ হতে থাকে।
৪. একটানা স্ক্রল করো।
Scrolling মানে “Mentally Zoning-out”! ব্রেইনের রিসোর্স শেষ, কিন্তু তোমার আঙুল বলছে: স্ক্রল না মারলে ঘুমও আসবে না!
৫. চিন্তা করো ২৪/৭, কাজ করো ০.৭৪
Brainstorming দিয়েই অফিস খুলছো কিন্তু অ্যাকশন? বলে “কাল থেকে করবো!”
তোমার Brain একটা Whiteboard।
কিন্তু লেখার মার্কারই তো শূন্য!
৬. Junk Food কে Brain Food মনে করো
সন্ধ্যায় ৪টা সিংগারা+৭টা চা, রাতে হাজি কাকার বিরিয়ানি
ওমাহ ভাই! Brain পাগল হয়ে বসে থাকবে।
Junk food, চিনি, কোলা, প্রসেসড খাবার—এগুলো ব্রেইনের Cognitive Ability কমিয়ে দেয়। একদম গুগল ক্রোমে ৫০টা এক্সটেনশন চালানোর মতো অবস্থা হয়, CPU Use ১০০% এ চলে যায়।
৭. কথা বিশ্বাস করো বিশ্বাসীর মতো, যাচাই করো না সামান্য
কে বলল?
YouTuber দাদা বলল, তাই ঠিক। সই একদম।
এই অভ্যাস তোমাকে করে দিচ্ছে ‘আজাইরা আইডিয়া কালেক্টর’। ব্রেইনের যদি চেকিং-পয়েন্টই না রাখো, সে ভুলে যাবে কে ঠিক, কে ভুল।
৮. “পারব না” নিজেকে বারবার বোঝাও
একবার টাইপ করা কোড error দিলেই বলো “এই জিনিস আমার জন্য না!”
ব্রেইন ধরা পড়ে “আচ্ছা ঠিক আছে, আমি আর চেষ্টাই করবো না।” এই ট্র্যাপে।
তুমি যত বেশি নিজের সাথে “আমি পারব না, আমি ব্যর্থ” বলবে, তোমার ব্রেইন তত বেশি সেটা বিশ্বাস করতে শুরু করবে। ব্রেইন নিউরাল পাথ তৈরি করে তোমার চিন্তার মতো করে।
৯. সবসময় কমফোর্ট জোনে থাকা
নতুন কিছু না শেখা, রিস্ক না নেয়া এগুলো ব্রেইনকে চ্যালেঞ্জহীন করে ফেলে। আর ব্রেইন চ্যালেঞ্জ ছাড়া থাকতে পারে না। তখন সে অলস আর দুর্বল হয়ে যায়।
অতিরিক্ত ইনফরমেশন খাওয়া কিন্তু কিছু না করা। একেকজন ইউটিউবে দিনে ৫ ঘণ্টা লেকচার দেখে, কিন্তু নোট নেয় না বা প্র্যাকটিস করে না। এতে মস্তিষ্ক ওভারলোড হয়, আর Action Zero।
১০. ব্রেইন দরকারে ডিসচার্জ দাও, কিন্তু চার্জ দাও না
Meditation, Walking, Journaling এসব বোরিং মনে হয়।
তাই ব্রেইন অফ থাকেও আবার অন হয় না।
আর সে বলে: “তুই তো আমাকে একটাই কাজ করাস স্ক্রল আর হাইসুপার টেনশন!”
হিংসা আর তুলনা করা কে আপন বানিয়ে ফেলসো। সবসময় অন্যের লাইফ দেখে জ্বলে-পুড়ে মরলে নিজের ব্রেইন প্রোডাক্টিভ কাজে এনার্জি দিতে পারে না। ব্রেইন তখন শুধু “তুলনা” আর disatisfaction এর লুপে পড়ে যায়।
ব্রেইন হলো সফটওয়্যারও, হার্ডওয়্যারও। তুমি যদি প্রতিদিন ভাইরাস চালাও, তাহলে একদিন Reset দিয়েও ঠিক হবে না।
তাই অভ্যাসগুলো চেক করো তুমি কি এগুলো করছো? যদি করো, আজ থেকেই বদলাও। কারণ শেখার, চিন্তার আর ক্রিয়েটিভিটির আসল পাওয়ার লুকিয়ে আছে একটা হেলদি ব্রেইনের ভেতরেই।
তোমার ব্রেইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্ট বয় হতে চায়
তুমি তাকে বানিয়ে রাখছো Scrolling ক্যাসিনো’র Regular কাস্টমার।



















