নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ:
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর সিরতা ব্লকের তেপান্তরের মোড়ের কৃষক মো. শাহীন মিয়া পেঁপে চাষে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সাধারণ কৃষক থেকে সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার এই পথচলায় তার পরিশ্রম ও উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।
এ বছর শাহীন মিয়া প্রায় ২ একর জমিতে ১,৫০০ পেঁপে চারা রোপণ করেছেন। এর আগে তিনি নিজ উদ্যোগে পেঁপে চাষ করলেও আশানুরূপ ফল পাননি। তাই এবার তিনি পেঁপে জাত নির্বাচন, গর্ত প্রস্তুত, সার প্রয়োগ, আগাছা ও বালাই দমনসহ সব ধাপেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ মেনে কাজ করেছেন। রাসায়নিক সার বাদ দিয়ে তরল জৈব সার ও সরিষার হরলিক্স ব্যবহার করায় চাষের খরচ অনেক কমেছে। গাছের বাড়ন্ত অবস্থায় গোড়ায় দুইবার সরিষার হরলিক্স এবং একবার তরল জীবাণু সার প্রয়োগের ফলে গাছে কোনো রোগবালাই দেখা যায়নি।
শাহীন মিয়া বলেন, “এ বছর প্রতিটি গাছে ৩০-৩৫টি করে পেঁপে ধরেছে, যার গড় ওজন ১.৫ থেকে ২ কেজি। প্রতি কেজি পেঁপে ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি করছি। বিষমুক্ত পেঁপে চাষে এত ভালো ফলন হবে তা ভাবিনি।”
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় ক্রেতারা তার জমি থেকেই সরাসরি পেঁপে কিনে নিচ্ছেন। ক্রেতাদের মতে, শাহীন মিয়ার পেঁপে শুধু দেখতে আকর্ষণীয় নয়, স্বাদেও দারুণ।
উপজেলা কৃষি অফিসার জুবাযরা বেগম সাথী বলেন, “আমরা কৃষকদের নিরাপদ ও বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত করছি। অতিরিক্ত পরিচালক ড. সালমা লাইজু স্যারের বিশেষ উদ্যোগে রাসায়নিক সার কমিয়ে তরল জৈব সার ও তরল হরলিক্স ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। শাহীন মিয়া তার একটি সফল উদাহরণ। তিনি আরও জানান, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারে খরচ বেশি হলেও জৈব সার ও বালাইনাশক ব্যবহারে ব্যয় কমে যায়, ফলে কৃষকের লাভও বৃদ্ধি পায়।
ময়মনসিংহ সদরের এই সফল চাষী শাহীন মিয়া প্রমাণ করেছেন— আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও জৈব পদ্ধতি অনুসরণ করলে কৃষক নিজে যেমন লাভবান হন, তেমনি সমাজও পায় নিরাপদ খাদ্য।